নারী উদ্যোক্তা রোবাইয়াত ফাতিমা তনি। সেইসঙ্গে তিনি ইনফ্লুয়েন্সার। তনির স্বামী শাহাদাৎ হোসাইন একজন সফল ব্যবসায়ী। যদিও এ দুজনের বয়সের ব্যবধান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রায়ই কটাক্ষের মুখে পড়েন এ নারী উদ্যোক্তা। এসবের জবাবও দেন তিনি।
শাহাদাৎ হোসাইন তনির দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন তিনি। এরপর ভালোবেসে বিয়ে করেন শাহাদাৎকে। প্রথমে পরিবার মেনে না নিলেও পরে সব ঠিক করে নেন তিনি। তারপরও তাদের দুজনের অসম বয়সের ব্যবধানের কারণে সামাজিকমাধ্যমে নেটিজেনদের সমালোচিত হন তনি।
এ মুহূর্তে তার স্বামী শাহাদাৎ হোসাইন অসুস্থ হয়ে লাইফ সাপোর্টে আছেন। এর আগে গত ৫ অক্টোবর সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন তনি। পরে তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ব্যাংকক নেওয়া হয়। বর্তমানে ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন শাহাদাৎ হোসাইন।।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তনির স্বামীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই অনেকে আবার দাবি করেছেন— ব্যবসার প্রচারণা বৃদ্ধির জন্যই স্বামীর অসুস্থতা নিয়ে ‘নাটক’ করছেন তনি। এ বিষয়গুলো নিয়ে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) ভোরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন আলোচিত এ নারী উদ্যোক্তা।
যেখানে তনি লিখেছেন— কিছু ভিউ ব্যবসায়ীর অত্যাচারে আমি বিরক্ত এবং মর্মাহত। তিনি বলেন, এখন ব্যাংককে সকাল ৬টা বাজে। আমি আইসিইউ রুমের সামনে বসে পোস্টটা লিখছি, দয়া করে আমি এবং আমার স্বামীকে নিয়ে কোনো প্রকার মিথ্যা সংবাদ প্রচার করবেন না।
কয়েকটি শিরোনাম তুলে ধরে তনি লিখেছেন— ‘তনির বুড়া স্বামী মারা গেছে’, ‘টাকার জন্য চিকিৎসা হচ্ছে না তনির স্বামীর’, ‘ব্যবসায়িক পলিসি’, ‘মৃত্যুর খবর গোপন করছে’— ভিউয়ের আশায় এসব মনগড়া খবর ছড়াবেন না ইত্যাদি।
উন্নত চিকিৎসার জন্য স্বামীকে দেশের বাইরে নিয়ে গেছেন উল্লেখ করে তনি বলেন, বাংলাদেশে তার চিকিৎসা আশানুরূপ ছিল না দেখে অনেক রিস্ক নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে আল্লার রহমতে এখানে নিয়ে আসতে পেরেছি। আমার স্বামী লাইফ সাপোর্টে, তাকে সুস্থ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। সবকিছু আল্লাহতায়ালার হাতে, তিনি চাইলে সব সম্ভব, ডাক্তার উছিলা মাত্র।
তনি বলেন, ‘আপনাদের মতো কিছু অযোগ্য লোকের ভিউ দরকার, আমার না! আমি নিজের যোগ্যতায় ব্যবসা করি, ভিউয়ের জন্য না। মানুষ আমার পন্যের কোয়ালিটি এবং বেস্ট প্রাইস দেখে কেনাকাটা করে, আমার চেহারা দেখে নয়।’
তনি আরও বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানে অনেক মানুষ কাজ করে। অনেক পরিবার জড়িত। আমাদের একটা নির্দিষ্ট চলমান গতি আছে। আমার স্টাফরা সবাই মিলে আমার অনুপস্থিতিতে আপ্রাণ চেষ্টায় ব্যবসা সামাল দিচ্ছেন। পারলে উৎসাহ দিয়েন, না পারলে আজেবাজে কথা বলবেন না, আল্লাহতায়ালা আপনাদের হেদায়েত দান করুণ।
তিনি বলেন, ‘আমি একজন আত্মবিশ্বাসী নারী। আল্লাহর ওপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস আছে আমার। যুদ্ধ করে আমি অভ্যস্ত। তবে এটা জীবনের সবচেয়ে কঠিন যুদ্ধ। আমি বিশ্বাস করি, আল্লাহ চাইলে সবকিছু সম্ভব।’
এর আগে এক পোস্টে তনি বলেন, ‘জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছি। আমি কোনোভাবেই তাকে হারাতে চাই না। সবকিছু অনিশ্চিত জেনেও আল্লাহর বিশেষ কোনো রহমতের আশায় অনেক কষ্ট করে আজকে সিঙ্গাপুর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে বাংলাদেশে এনে তারপর ব্যাংকক নিয়ে আসছি। আমার জীবনের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করছি, বাকি আল্লাহর ইচ্ছা। সবাই দোয়া করবেন আমার ছেলের জন্য হলেও আল্লাহ যেন তাকে বাঁচিয়ে রাখে।