আওয়ামী লীগ ও বিগত সরকারের উদ্দেশ্যে জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, তোমরা এখন কোথায়, কোন জঙ্গলে লুকিয়ে আছো? কোন গর্তে তোমাদের অবস্থান? এখন বিভিন্ন জায়গায় পালাচ্ছো কেন? এটা না তোমাদের মার দেশ- না বাবার দেশ? তোমরা না দেশের মালিক ছিলা? তো মালিকগুলো কোথায় গেলা? আসো সাহস করে। যারা এই জাতির ওপরে জুলুম করেছেন, তাদের সকলের বিচার এই জাতি দেখতে চায়।
গতকাল (শুক্রবার) গাজীপুরের ঐতিহাসিক রাজবাড়ী ময়দানে জামায়াতে ইসলামী গাজীপুর মহানগরের উদ্যোগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শাহাদতবরণকারী পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
জামায়াতের আমীর আরও বলেন, আমরা দাবি করি প্রত্যেকটা শহীদ পরিবারের থেকে কমপক্ষে একজনকে যাতে সম্মানজনক চাকরি দেয়া হয়। লড়াই করে যারা আহত হয়েছে তাদেরও যাতে সম্মানজনক চাকরি দেয়া হয়। তারা যাতে কারও করুণার পাত্র হয়ে না থাকে। জাতির দায়িত্ব এখন এই পরিবার ও ব্যক্তিদের সম্মানিত করা। আমরা দল এবং ধর্মের ভেতর থেকে কোনো বিভাজন মানি না।
তিনি আরও বলেন, আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ জাতি চাই। রাজনীতিতে কোনো ব্রাহ্মণগিরি চলবে না। রাষ্ট্রে আমরা সবাই সমান। এখন কথা হলো- যারা পালিয়ে গেলেন, লুকিয়ে গেলেন, গর্তে গেলেন, কলাপাতায় ঘুমিয়ে গেলেন তাদের কি হবে, তাদের প্রতি কোনো অবিচার হোক তা চাই না। কিন্তু যার ফাঁসি হওয়ার কথা ফাঁসি হোক। যার যাবজ্জীবন পাওনা সেটাই যেন পায়। তারাই বড় গলায় বলেছেন আইন সবার জন্য সমান, আসেন এখন সমান আইনটা কেমন একটু দেখে যান। তারা বলেছেন স্বাধীন বিচার বিভাগ, আমরা এখনও বলছি বিচার বিভাগ স্বাধীন থাকুক।
জামায়াতের আমীর আরও বলেন, আমরা শহীদদের কোনো দলীয় ভিত্তিতে ভাগ করতে চাই না। শহীদগণ জাতীয় সম্পদ। তাদেরকে ইজ্জতের চূড়ান্ত সীমায় রাখতে চাই, দেখতে চাই। এই শহীদ পরিবারগণের প্রতি রাষ্ট্রকে অবশ্যই নৈতিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। শহীদ পরিবারের লোকজন আমাদের অহংকারের পাত্র সম্মানের পাত্র। সরকারের কাছে দাবি জানাবো শহীদদের যেন সঠিক স্বীকৃতি দেয়া হয়।
তিনি বলেন, জাতির সঙ্গে গাদ্দারি করলে, তাদের সেবক হয়ে মালিক বনে গেলে কি পরিণতি হয় তা থেকে আমি, আমরা এবং জাতিকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, আর কোনো স্বৈরাচার সরকার আসবে না যারা ক্ষমতায় থাকাবস্থায় জনগণকে তাদের কেনা টাকায় বুলেট ছোড়ার দুঃসাহস করবে। এমন কোনো নতুন সন্ত্রাসী সরকার দেখতে চাই না।
উক্ত মতবিনিময় সভায় মহানগর জামায়াতের আমীর অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহ, ঢাকা অঞ্চল উত্তরাঞ্চল টিম সদস্য আবুল হাসেম খান, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন, জেলা আমীর ড. জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর নায়েবে আমীর মুহাম্মদ খায়রুল হাসান, মহানগর সেক্রেটারি আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক, প্রচার সম্পাদক মো. সালাহউদ্দিন আইউবী, মমতা আফজাল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।